ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা

ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চায়। কেননা আপনি যদি নন সেনজেন ভুক্ত দেশ গুলোর নাম জানেন তাহলে সহজেই সেনজেন ভুক্ত এবং নন সেনজেন ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে প্রার্থক্য করতে পারবেন। এই আর্টিকেলে ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা সম্পর্কে আপনাকে জানাবো। সেনজেন ভুক্ত যেকোনো একটি দেশের ভিসা থাকলে আপনি সহজেই সেনজেন ভুক্ত অন্যান্য দেশে যেতে পারবেন। অন্যদিকে নন সেনজেন ভুক্ত প্রত্যেক দেশে যাওয়ার জন্য আলাদা আলাদা ভিসা এবং পাসপোর্টের প্রয়োজন হবে। 

ইউরোপের-নন-সেনজেন-ভুক্ত-দেশের-তালিকা

তাছাড়া আরো আলোচনা করবো-সেনজেন ও নন সেনজেন দেশ বলতে কি বোঝায়, ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকা, ইউরোপ মহাদেশের স্বাধীন দেশ কয়টি, ইউরোপের ধনী দেশের তালিকা, সেনজেন দেশের সুবিধা, ইউরোপের সবচেয়ে বড় দেশের তালিকা, ইউরোপের দেশগুলো মনে রাখার কৌশল ইত্যাদি। কাজেই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। 

আর্টিকেল সূচিপত্র - ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা সংশ্লিষ্ট সূচিপত্র 

ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা 

ইউরোপীয় যেসব দেশ নন সেনজেন দেশের অন্তর্ভুক্ত নিচে তা দেওয়া হলো: 
  • যুক্তরাজ্য 
  • কাজাখস্তান 
  • আইসল্যান্ড
  • কসোভো
  • বেলারুশ 
  • আলবেনিয়া 
  • মোনাকো
  • রাশিয়া 
  • সার্বিয়া
  • মন্টেনেগ্রো 
  • আর্মেনিয়া
  • ইউক্রেন 
  • আর্মেনিয়া
  • লিচটেনস্টাইন 
  • আন্দোরা
  • উত্তর ম্যাসেডোনিয়া
  • বসনিয়া 
বর্তমানে ক্রোয়েশিয়াকেও নন সেনজেন দেশের আওতায় আনা হয়েছে। 

সেনজেন ও নন সেনজেন দেশ বলতে কি বোঝায় 

সেনজেন দেশ :
সেনজেন দেশ বলতে ইউরোপের কতগুলো দেশকে বোঝায় যারা নিজেদের মধ্যে সেনজেন চুক্তির মাধ্যমে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়েছে। সেনজেন দেশের অন্তর্ভুক্ত যেকোনো নাগরিক সহজেই ভিসা ছাড়া অন্য দেশে যেতে পারে। ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে মুক্ত ভ্রমণ নিশ্চিত করা হচ্ছে সেনজেন চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিলো। 
নন সেনজেন দেশ :
যেসব দেশ ইউরোপের সেনজেন চুক্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয় সেসব দেশকে নন সেনজেন দেশ বলা হয়। এসব দেশ ইউরোপে অবস্থিত হওয়ার পরও সেনজেন চুক্তির অংশ নয়।

ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা 

ইউরোপের-নন-সেনজেন-ভুক্ত-দেশের-তালিকা

একটু আগে আপনারা ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশের নামগুলো সম্পর্কে জানলেন। এবার জানবেন ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত দেশগুলো সম্পর্কে। বর্তমান সেনজেন দেশের তালিকায় মোট ২৭ টি দেশ রয়েছে। চলুন তাহলে দেশগুলোর নাম একনজরে দেখে নেই। 
  • শ্লোভাকিয়া 
  • হাঙ্গেরি 
  • পোল্যান্ড
  • চেক রিপাবলিক 
  • পর্তুগাল
  • গ্রিস 
  • স্পেন
  • ইতালি
  • ফিনল্যান্ড
  • ডেনমার্ক 
  • সুইডেন  
  • নেদারল্যান্ডস 
  • বেলজিয়াম 
  • ফ্রান্স 
  • জার্মানি 
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের কিছু দেশও সেনজেন দেশের অন্তর্ভুক্ত। যেমন-
  • আইসল্যান্ড
  • সুইজারল্যান্ড 
  • নরওয়ে 

ইউরোপ মহাদেশের স্বাধীন দেশ কয়টি 

অনেকেই জানতে চায় যে, ইউরোপ মহাদেশে কতটি স্বাধীন দেশ রয়েছে।আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইউরোপে ৫০ টি স্বাধীন দেশ রয়েছে। নিচে স্বাধীন দেশগুলোর নাম দেওয়া হলো:
  • ইউক্রেন
  • ভ্যাটিকান সিটি
  • যুক্তরাজ্য 
  • স্পেন
  • সুইডেন
  • সুইজারল্যান্ড 
  • সান মারিনো
  • তুরস্ক 
  • স্লোভাকিয়া 
  • স্লোভেনিয়া 
  • পোল্যান্ড
  • রোমানিয়া
  • পর্তুগাল 
  • উত্তর মেসিডোনিয়া 
  • নরওয়ে 
  • বেলজিয়াম 
  • বেলারুশ 
  • আলবেনিয়া 
  • আর্মেনিয়া
  • আজারবাইজান 
  • অস্ট্রিয়া
  • ক্রুয়েশিয়া
  • সাইপ্রাস 
  • বুলগেরিয়া 
  • বসনিয়া
  • ডেনমার্ক 
  • এস্তোনিয়া 
  • জার্মানি 
  • জর্জিয়া
  • ফ্রান্স
  • আয়ারল্যান্ড 
  • আইসল্যান্ড
  • হাঙ্গেরি 
  • কসোভো 
  • কাজাখস্তান 
  • ইতালি 
  • লিথুয়ানিয়া
  • লিচটেনস্টাইন
  • লাটভিয়া
  • মোনাকো
  • মলডোভা
উপরোক্ত দেশগুলো ইউরোপের স্বাধীন দেশ। 

ইউরোপের ধনী দেশের তালিকা  

সারাবিশ্বে মহাদেশ গুলোর মধ্যে ইউরোপ মহাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক বেশি উন্নত। ইউরোপ মহাদেশের সকল দেশই অনেক বেশি উন্নত। একটি দেশ কতটা উন্নত বা গরিব তা সাধারণত সেই দেশের মানুষের মাথাপিছু জিডিপি দিয়ে পরিমাপ করা হয়। জিডিপি হচ্ছে কোনো একটি দেশের নাগরিকদের গড় আয়। চলুন তাহলে ইউরোপের ধনী দেশগুলো সম্পর্কে জেনে নেই। 
জার্মানি :
ইউরোপের এই দেশটির মাথাপিছু আয় প্রায় ষাট হাজার আটশ মার্কিন ডলার।
অস্ট্রিয়া :
এই দেশের নাগরিকদের মাথাপিছু আয় তেষট্টি হাজার আটশ মার্কিন ডলার। 
ডেনমার্ক :
ডেনমার্কের মাথাপিছু জিডিপি হচ্ছে ৬৮ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। 
সুইজারল্যান্ড :
সুইজারল্যান্ডের মাথাপিছু জিডিপি ৮৪ হাজার আটশো মার্কিন ডলার। 
নরওয়ে :
নরওয়ে জিডিপি ৭৯ হাজার ৬০০ মার্কিন ডলার। 
লুক্সেমবার্গ :
লুক্সেমবার্গের মাথাপিছু জিডিপি ১২৮ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলার। লুক্সেমবার্গ পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ। দেশটির অনেক শক্তিশালী অর্থনীতি এবং ব্যাংকিং সেক্টর রয়েছে যা দেশটিকে ধনী দেশে পরিণত করেছে। 
আয়ারল্যান্ড :
আয়ারল্যান্ড দেশটিতে অনেক উন্নত প্রযুক্তি এবং ফার্মাসিউটিক্যাল খাত রয়েছে। দেশটির নাগরিকদের জিডিপি ১০১,৫২০ মার্কিন ডলার। দেশটি খুবই উন্নত। 
সুইডেন :
অর্থনীতিতে শক্তিশালী ইউরোপের এই দেশটির জিডিপি ৬১,০০০ মার্কিন ডলার। 
নেদারল্যান্ডস :
প্রযুক্তি এবং শিল্পে উন্নত একটি দেশ হচ্ছে নেদারল্যান্ডস। নেদারল্যান্ডসের মাথাপিছু জিডিপি 64,800 মার্কিন ডলার।
আইসল্যান্ড
আইসল্যান্ড দেশটি ছোট হলেও অর্থনীতি, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং পর্যটনের দিক দিয়ে খুবই উন্নত। আইসল্যান্ড দেশটির মাথাপিছু জিডিপি হচ্ছে 74,700 মার্কিন ডলার। 

সুতরাং বলা যায় যে, এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে ইউরোপের দেশগুলো কতটা উন্নত। উপরোক্ত দেশগুলো ইউরোপের সবচেয়ে ধনী দেশ। 

সেনজেন দেশের সুবিধা 

সেনজেন দেশের অনেক সুবিধা রয়েছে। চলুন দেখে নেই সেনজেন দেশের সুবিধা সম্পর্কে। 
  • আপনার যদি একটি সেনজেন ভিসা থাকে তাহলে আপনি এই ভিসা দিয়ে বারবার সেনজেনভুক্ত অন্যান্য দেশে যেতে পারবেন। 
  • সেনজেন ভিসা দিয়ে আপনি ৯০ দিনের মতো অন্যান্য দেশে থাকতে পারবেন। 
  • সেনজেন ভিসা থাকলে অন্য দেশে যাওয়ার সময় আপনাকে কখনো চেকিং করবে না। 
  • যদি কোনো অপরাধ করে থাকেন তাহলে বিচার বিভাগ এবং পুলিশ একসাথে কাজ করবে। 
  • ইউরোপের যেকোনো দেশে ব্যবসা করতে পারবেন এবং পর্যটক হিসেবে যেতে পারবেন। 
  • সেনজেনভুক্ত দেশে সহজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন করতে পারবেন এবং চাকরি করতে পারবেন। 
  • সেনজেন দেশে আপনি উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা পেয়ে থাকবেন। 
  • উন্নতমানের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে থাকবেন। 
সুতরাং সেনজেন ভিসা বা সেনজেন দেশে থাকলে আপনি উপরোক্ত সুবিধাগুলো পেয়ে থাকবেন। 
ইউরোপের-নন-সেনজেন-ভুক্ত-দেশের-তালিকা

ইউরোপের সবচেয়ে বড় দেশের তালিকা 

আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আপনি জানতে পারবেন ইউরোপের সবচেয়ে বড় দেশ সম্পর্কে। নিচে তা দেওয়া হলো:
ফ্রান্স :
পশ্চিম ইউরোপের সবচেয়ে বড় দেশ হচ্ছে ফ্রান্স এবং এটি ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। 
ইতালি :
ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ দেশ ইতালি একটি বড় দেশ এবং দেশটি আয়তনে তিন লক্ষ এক হাজার তিনশত কিলোমিটার। 
রাশিয়া :
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়া যা এশিয়া এবং ইউরোপ জুড়ে অবস্থিত। 
স্পেন:
ইউরোপের দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত একটি দেশ হচ্ছে স্পেন যা পাঁচ লক্ষ পাঁচ হাজার নয়শত নব্বই কিলোমিটার। 
সুইডেন
স্ক্যান্ডেনেভিয়ান দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম দেশ হচ্ছে সুইডেন। 
জার্মানি :
ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ জার্মানির আয়তন 357,022 বর্গকিলোমিটার। 
পোল্যান্ড:
মধ্য ইউরোপের এই দেশটি অনেক বড়। 
ফিনল্যান্ড :
ইউরোপের দেশ ফিনল্যান্ডের আয়তন হচ্ছে 338,455 বর্গ কিলোমিটার।
নরওয়ে :
ইউরোপের উপকূলীয় অঞ্চলের এই দেশটি 385,207 বর্গ কিলোমিটার। 

সুতরাং উপরে উল্লেখযোগ্য দেশগুলো ইউরোপের অনেক বড় দেশ। 

ইউরোপের দেশগুলো মনে রাখার কৌশল 

ইউরোপের দেশগুলো মনে রাখার জন্য বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। এতে করে আপনার সহজেই দেশগুলোর নাম মনে থাকবে। নিচে তা দেওয়া হলো :
  • ইউরোপীয় দেশগুলো মনে রাখার জন্য আপনি মৌখিক পুনরাবৃত্তি করতে পারেন। যেমন -প্রতিদিন বার বার উচ্চারণ করা। এতে করে আপনার সহজেই মনে থাকবে। 
  • মনে রাখার জন্য আপনি বিভিন্ন অ্যাপের সাহায্য নিতে পারেন যেমন Anki। 
  • সহজে মনে রাখার জন্য নিজের মতো করে একটি গান বা ছন্দ বানিয়ে নিতে পারেন। 
  • ইউরোপের দেশগুলোকে বিভিন্ন অঞ্চল হিসেবে বিভক্ত করে নিতে পারেন যেমন -পূর্ব ইউরোপ, পশ্চিম ইউরোপ,উত্তর ইউরোপ এবং দক্ষিণ ইউরোপ। 
  • ইউরোপের মানচিত্র দেখে মনে রাখার চেষ্টা করতে পারেন। 
  • ইউরোপের দেশগুলোকে মেমোরি প্যালেস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। 
সুতরাং ইউরোপের দেশগুলো মনে রাখার জন্য আপনি উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে পারেন। 

মন্তব্য 

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা এবং এই সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। আর্টিকেল পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত, পরামর্শ কিংবা প্রশ্ন আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সমৃদ্ধ আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট My Teach Info। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

My Teach Info এরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url