এজেন্ট ব্যাংকিং নিতে কত টাকা লাগে?
এজেন্ট ব্যাংকিং হচ্ছে সেসকল ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান যা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে ব্যাংকের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে।দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত সকলের কাছে সেবা পৌঁছানো হচ্ছে এজেন্ট ব্যাংকের কাজ।অনেকেই জানতে চায় যে এজেন্ট ব্যাংকিং নিতে কত টাকা লাগে? আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে এজেন্ট ব্যাংকিং নিতে কত টাকা লাগে তা নিয়ে আলোচনা করবো। কাজেই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
তাছাড়া আরো আলোচনা করব -এজেন্ট ব্যাংকিং এর সেবাসমূহ,এজেন্ট ব্যাংকিং খোলা কি নিরাপদ,বাংলাদেশে কতগুলো এজেন্ট ব্যাংকিং রয়েছে,কোন কোন ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং রয়েছে, এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা, এজেন্ট ব্যাংকিং এর অসুবিধা,এজেন্ট ব্যাংকিং খোলার উপায়।
আর্টিকেল সূচিপত্র - এজেন্ট ব্যাংকিং নিতে কত টাকা লাগে সংশ্লিষ্ট সূচিপত্র
- এজেন্ট ব্যাংকিং নিতে কত টাকা লাগে
- এজেন্ট ব্যাংকিং এর সেবাসমূহ
- এজেন্ট ব্যাংকিং খোলা কি নিরাপদ
- বাংলাদেশে কতগুলো এজেন্ট ব্যাংকিং রয়েছে
- কোন কোন ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং রয়েছে
- এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা
- এজেন্ট ব্যাংকিং এর অসুবিধা
- এজেন্ট ব্যাংকিং খোলার উপায়
- আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর
- লেখকের মন্তব্য
আরও পড়ুনঃ করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়
এজেন্ট ব্যাংকিং নিতে কত টাকা লাগে
এজেন্ট ব্যাংকিং নিতে কত টাকা লাগে এই নিয়ে আর্টিকেলের শুরুতেই আলোচনা করবো-
এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক ব্যাংক প্রদান করে থাকে। ২০১৪ সালে সর্বপ্রথম এজেন্ট ব্যাংকিং চালু হয়। ইউনিয়ন পর্যায়েও বর্তমানে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। এই সেবা দিন দিন বেড়েই চলেছে।এজেন্ট ব্যাংকিং নিতে কত টাকা প্রয়োজন হবে তা নির্ভর করে থাকে স্থানের উপর। এজেন্ট ব্যাংকিং পরিচালনা করার জন্য আপনার কমপক্ষে ১৫ লক্ষ টাকা মূলধন থাকতে হবে।সাধারণত একটি এজেন্ট ব্যাংকিং নিতে হলে আপনার দশ লক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে হয়৷
আরও পড়ুনঃ জার্মানিতে যেতে IELTS কত পয়েন্ট লাগে
এজেন্ট ব্যাংকিং এর সেবাসমূহ
এজেন্ট ব্যাংকিং অনেকগুলো সেবা প্রদান করে থাকে যেমন -
- ঋণের কিস্তি পরিশোধ করার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা দিয়ে থাকে।
- হিসাবের স্থিতি সম্পর্কে জানা
- বিভিন্ন ধরনের ইউটিলিটি বিল যেমন - ইন্টারনেটের বিল,গ্যাসের বিল, টিউশন ফি,মোবাইল ফি,ল্যান্ড ফোনের বিল ইত্যাদি প্রদান করে থাকে।
- রেমিট্যান্স সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে
- নগদ টাকা উওোলন করার জন্য
- ব্যাংকের হিসাব খোলার জন্য
- ঋন আবেদন, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের সহায়তার জন্য।
- বিভিন্ন মেয়াদি হিসাব খোলার জন্য
- তহবিল স্থানান্তর করার জন্য
- নগদ টাকা জামাদানের ক্ষেত্রে
- নগদ টাকা উত্তোলন করার জন্য
- ই-কেওয়াইসি হালনাগাদ করার জন্য
সুতরাং এজেন্ট ব্যাংকিং উপরোক্ত সেবাগুলো প্রদান করে থাকে।
লেনদেনের সীমানা:
এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে গ্রাহক প্রতিদিন কত টাকা এবং কতগুলো লেনদেন করতে পারবে তা সম্পূর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করে থাকে।পরিবর্তনও বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ম অনুযায়ী হয়ে থাকে। তবে ৬ লক্ষ এর বেশি লেনদেন করা যায় না।
আরও পড়ুনঃ ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ জানুন
এজেন্ট ব্যাংকিং খোলা কি নিরাপদ
এজেন্ট ব্যাংকিং খোলার নিরাপত্তা সম্পর্কে এই পর্যায়ে জানতে পারবেন। যেমন-
- এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন সাধারণত পিন বা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হয়। এজন্য গ্রাহকের হিসাব সুরক্ষিত এবং নিরাপদ থাকে।
- যদিও এজেন্ট ব্যাংকের গ্রাহকগন ব্যাংকের গ্রাহক, এজন্য ব্যাংকের সকল হিসাব সিস্টেমে চলে যায়।
- যখন আপনি এজেন্ট ব্যাংকে লেনদেন করবেন তখন আপনার রেজিস্ট্রার্ড মোবাইল নাম্বারে এসএমএস বা নোটিফিকেশন আসবে। এতে করে আপনি কি পরিমাণ অর্থ লেনদেন করছেন তা জানতে পারবেন।এতে বোঝা যায় যে ব্যাংকে টাকা রাখার নিরাপত্তা এজেন্ট ব্যাংকেও টাকা রাখার সমান৷
- এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করা অনেক নিরাপদ। কারণ প্রতিটি এজেন্ট ব্যাংকের বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন রয়েছে।
- এজেন্ট একাউন্ট খোলার সময় বায়োমেট্রিক বিভিন্ন তথ্য ব্যবহার করা হয় বিধায় ব্যাংক হিসাব খোলা নিরাপদ।
উপরোক্ত তথ্যগুলো থেকে বলা যায় যে, এজেন্ট ব্যাংকিং খোলা অনেক নিরাপদ।
বাংলাদেশে কতগুলো এজেন্ট ব্যাংকিং রয়েছে?
এজেন্ট ব্যাংকিং গতানুগতিক ব্যাংকিং ধারণাকে বদলিয়ে দিয়েছে। এই ব্যাংকের মাধ্যমে দেশের সকল স্তরের জনগণ ২৪ ঘন্টা সেবা নিতে পারে। এজেন্ট ব্যাংকিং শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষের কাছে বেশি পরিচিত। এতে করে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা এসে পড়েছে মানুষের হাতের নাগালে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে ১০ বছরে বাংলাদেশে ব্যাংকিং সেবা চালু করেছে ৩১ টি ব্যাংক। গত বছরের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের সংখ্যা ২১ হাজার ৪৪৩ টি। বর্তমানে আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে আউটলেটের সংখ্যার উপর নির্ভর করে শীর্ষস্থানে রয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংক পিএলসি। আবার হিসাবের দিক দিয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছে ব্যাংক এশিয়া। আমানতের দিক দিয়ে বর্তমানে শীর্ষস্থায়ীয় আউটলেট হচ্ছে ইসলামি ব্যাংক পিএলসি।
আরও পড়ুনঃ মহাখালী কলেরা হাসপাতাল ঠিকানা
কোন কোন ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং আছে
যেসব ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং চালু রয়েছে চলুন দেখে নেই -
- স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক
- প্রিমিয়ার ব্যাংক
- দক্ষিণ -পূর্ব ব্যাংক
- এক্সিম ব্যাংক
- মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক
- পূর্বালী ব্যাংক লিমিটেড
- মধুমতী ব্যাংক লিমিটেড
- মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক
- এক্সিম ব্যাংক
- ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড
- মিডল্যান্ড ব্যাংক
- অরণী ব্যাংক
- সোনালী ব্যাংক
- ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড
- এবি ব্যাংক লিমিটেড
- শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড
- এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড
- ইউসিবি ব্যাংক লিমিটেড
- সিটি ব্যাংক লিমিটেড
- আল আরাফাহ ব্যাংক লিমিটেড
- ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড
- ব্রাক ব্যাংক লিমিটেড
- মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড
- ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড
- এশিয়া ব্যাংক লিমিটেড
- ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড
উপরোক্ত ব্যাংকগুলোর এজেন্ট ব্যাংকিং রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কলেরা রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ
এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা
এজেন্ট ব্যাংকিং হচ্ছে মানুষের সাথে যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম। এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধাগুলো হচ্ছে -
- এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে গ্রাহকরা সহজে ডিজিটাল লেনদেন করতে সক্ষম।এজেন্ট ব্যাংকিং এর মধ্যে রয়েছে আর্থিক পরামর্শ ও ব্যাক্তিগত অফার।
- গ্রাহক যথাসময়ে লেনদেন করতে পারে।
- স্মার্ট ফোনের মাধ্যমেই গ্রাহকরা ব্যাংকিং সেবা নিতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ এবং সময়ও সাশ্রয় হয়।
- এজেন্ট ব্যাংকিং এর গ্রাহকরা সহজে ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারে। শুধুমাত্র আইটি রিটার্ন এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিয়েই লোনের আবেদন করতে পারে।
- কন্টাক্টলেস পেমেন্ট সিস্টেম থাকার কারণে টাকা অনেক নিরাপদে থাকে।
আরও পড়ুনঃ ডায়রিয়া হলে করণীয় কি
এজেন্ট ব্যাংকিং এর অসুবিধা
এজেন্ট ব্যাংকিং এর তেমন কোনো অসুবিধা নেই। তবে এর একটি অসুবিধা রয়েছে সেটি হচ্ছে লিমিটেশন। এজেন্ট ব্যাংকিং এর লেনদেনের পরিধি কম। এই সেবার মাধ্যমে আপনি ৫ লক্ষ টাকার বেশি লেনদেন করতে পারবেন না।তবে বর্তমানে আরো এক লক্ষ টাকা যোগ করা হয়েছে। অর্থাৎ আপনি এক মাসে ৬ লক্ষ টাকার বেশি লেনদেন করতে পারবেন না। এই একটি মাএ অসুবিধায় এজেন্ট ব্যাংকিং এর বিদ্যমান।
আরও পড়ুনঃ জমির খতিয়ান বের করার নিয়ম
এজেন্ট ব্যাংকিং খোলার উপায়
যেকোনো ব্যাক্তি এজেন্ট ব্যাংকিং খোলতে পারে।এই ব্যাংকিং খোলা অনেক সহজ। এজেন্ট ব্যাংকিং খোলার জন্য আপনার প্রয়োজন একটি জাতীয় পরিচয় পএ। যদি জাতীয় পরিচয়পএ না থাকে তাহলেও কোনো সমস্যা নেই। কারণ আপনার বাবা বা মায়ের যদি জাতীয় পরিচয়পএ থাকে তাহলেই এজেন্ট ব্যাংকিং খোলতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
লেখকের মন্তব্য
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে এজেন্ট ব্যাংকিং নিতে কত টাকা লাগে এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনি এজেন্ট ব্যাংকিং নিয়ে অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার মতামত, পরামর্শ কিংবা প্রশ্ন আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট My Teach Info।ধন্যবাদ।
My Teach Info এরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url