[করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়]
করোসল ফলকে বলা হয় প্রাকৃতিক কেমোথেরাপি। ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীকে যখন কেমোথেরাপি দেওয়া হয় তখন শরীরে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কিন্তু করোসল ফলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এজন্য সকলেই জানতে চায় করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়? আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। কাজেই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
তাছাড়া আরো আলোচনা করবো-করোসল ফলের উপকারিতা,করোসল পাতা খাওয়ার নিয়ম,করোসল ফল খাওয়ার অপকারিতা,ঢাকায় করোসল ফল কোথায় পাওয়া যায়, করোসল ফলের দাম,করোসল ফল সিলেটে কোথায় পাওয়া যায়।
পোস্ট সূচিপত্র - করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায় সংশ্লিষ্ট সূচিপত্র
- করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়
- করোসল ফলের উপকারিতা
- করোসল পাতা খাওয়ার নিয়ম
- করোসল ফল খাওয়ার অপকারিতা
- ঢাকায় করোসল ফল কোথায় পাওয়া যায়
- করোসল ফলের দাম
- করোসল ফল সিলেটে কোথায় পাওয়া যায়
- করোসল ফল ক্যান্সার প্রতিরোধে কিভাবে কাজ করে
- আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর
- লেখকের মন্তব্য
আরও পড়ুনঃ ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ জানুন
করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়
ক্যান্সার প্রতিরোধক করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায় তা নিয়ে শুরুতেই আলোচনা করবো-
করোসল ফল অত্যন্ত স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ। করোসল ফল যে ক্যান্সার বিরোধী এই নিয়ে চিকিৎসকরা কার্যকর ব্যাখা না দিলেও এর বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলেনি। একথাও শোনা যায় যে,করোসল গাছের পাতা নিয়মিত পান করার ফলে অনেকে উপকৃত হয়েছেন। করোসল পাতা শুধু যে ক্যান্সার প্রতিরোধী তা নয় বরং তা ডায়াবেটিস, কিডনিসহ অন্যান্য রোগেরও প্রতিরোধেও সাহায্য করে। করোসল ফলের চেয়ে করোসল পাতা অনেক বেশি কার্যকরী।
ক্যান্সার প্রতিরোধী এই ফল বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় চাষ করা হচ্ছে। বরগুনা,ময়মনসিংহ,রাজশাহী,নীলফামারিতে বর্তমানে করোসল ফল চাষ হচ্ছে। যেহেতু করোসল একটি বিরল ফল তাই এর চাষ বর্তমানে প্রায় দেখা যায় না বলেই চলে। এই ফলটি চাষ হওয়ার জন্য উপযুক্ত মাটি ও জলবায়ু প্রয়োজন। এটি ঢাকা,খুলনা এবং বরিশালের বিভিন্ন জেলায় চাষ হয়। তাছাড়া এই ফলটি ভারত থেকেও আমদানি করা হয়।
আরও পড়ুনঃ মহাখালী কলেরা হাসপাতাল ঠিকানা
করোসল ফলের উপকারিতা
করোসল ফলে যে অনেক ওষুধি গুনাগুন রয়েছে তা সর্বপ্রথম মানুষ জানতে পারে ১৯৭৬ সালে। করোসলে থাকা ক্যামিকেল ক্যামোথেরাপিতে ব্যবহূত এড্রিওমাইসিন থেকে দশ হাজার গুন বেশি কার্যকর হয়ে থাকে। করোসল ফলের স্বাদ খাবার দইয়ের মতো হয়ে থাকে। এটিকে দইয়ের পরিবর্তে জাপানে বিক্রি করা হয়।
করোসলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। করোসল থেকে তৈরি তেল ব্রণ ও ফোঁড়া প্রতিরোধী । এতে এন্টিব্যাকটেরিয়াল গুন রয়েছে। ফাটা ত্বক ও শিষে করোসল তেল ব্যবহার করা হয়। সোরিয়াসিস ও একজিমা রোগে করোসল তেল ব্যবহার করা হয়। করোসল তেল সুগন্ধযুক্ত হয়ে থাকে। করোসল পাতা ইমিউন সিস্টেমকে অনেক বেশি উন্নত করে। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। করোসল পাতা উচ্চ রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
আরও পড়ুনঃ কলেরা রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ
করোসল পাতা খাওয়ার নিয়ম
সকল কিছু খাওয়ারই সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে। নিয়ম মেনে না খেলে এর সঠিক গুনাগুন পাওয়া অসম্ভব। করোসল পাতা খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে -
করোসল পাতা খাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে ১০-১৫ টি করোসল পাতা সংগ্রহ করতে হবে। তারপর পাতাগুলো সুন্দর করে পরিষ্কার করে নিন। এবার একটি পাতিলে পরিষ্কার পানি নিয়ে তাতে করোসল পাতা দিন। পাতিলে তাপ দিয়ে গরম করতে থাকুন৷ ১০ থেকে ১৫ মিনিট গরম হওয়ার পর চুলা থেকে পাতিল নামিয়ে নিন।এবার চা পাতা যেমন করে ছাঁকেন তেমন করে ছেঁকে নিন। এভাবেই তৈরি করা হয় করোসল পাতার চা। ঠান্ডা বা গরম যেকোনো অবস্থায় এই চা পান করতে পারবেন। করোসল চা তিনবেলা খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে খান। এভাবেই মূলত করোসল পাতা খাওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ ডায়রিয়া হলে করণীয় কি?
করোসল ফল খাওয়ার অপকারিতা
অতিরিক্ত কোনো কিছুই শরীরের জন্য ভালো নয়। করোসল ফলও বেশি খেলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর। নিচে করোসল ফলের কিছু অপকারিতা দেওয়া হলো:
- আপনার যদি নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা থাকে তাহলে করোসল ফল খাওয়া উচিত নয়। কারন ফলটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
- আপনি যদি প্রতিদিন ডায়াবেটিস ওষুধ খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার করোসল ফল খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
- গর্ভবতী মহিলাদের করোসল ফল খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কেননা এতে থাকা বিভিন্ন টক্সিন শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
- এলার্জির সমস্যা থাকলে আপনার করোসল না খাওয়াই সবচেয়ে ভালো।
- অতিরিক্ত পরিমাণ করোসল ফল খেলে তা নিউরোলজিক্যাল বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে পারে।
- গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা যেমন -ডায়রিয়া, বমি বা পেট ব্যাথা হতে পারে।
সুতরাং বলা যায় যে, করোসল ফলের বেশকিছু অপকারিতাও রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়
ঢাকায় করোসল ফল কোথায় পাওয়া যায়
অনেকেই জানতে চায় যে, ঢাকার কোন জায়গায় করোসল ফল পাওয়া যায়। ঢাকায় করোসল ফল পাওয়ার জন্য আপনাকে চারাবাগ,আশুলিয়া নার্সারিতে যোগাযোগ করতে হবে। তাছাড়া ঢাকার যুব এগ্রোর সংস্থা থেকেও করোসল ফল আপনি নিতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ জমজমের পানি খাওয়ার নিয়ম
করোসল ফলের দাম
করোসল ফল হচ্ছে একটি বিরল প্রজাতির ফল। কারন এই ফল সহজে পাওয়া যায় না। করোসল ফলের দাম সাধারণের জন্য সহজলভ্য নয়। একটি করোসল ফলের ওজন ২৫০ গ্রাম হয়ে থাকে।করোসল ফলের মূল্য ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনঃ জার্মানিতে যেতে IELTS কত পয়েন্ট লাগে
করোসল ফল সিলেটে কোথায় পাওয়া যায়
যেহেতু করোসল ফল সকল জায়গায় পাওয়া যায় না এজন্য সিলেটের মানুষ জানতে চায় যে সিলেটে করোসল ফল কোথায় পাওয়া যায়? সিলেটে করোসল ফল পাওয়ার জন্য আপনাকে বিভিন্ন উদ্যান ও নার্সারিতে খোঁজ নিতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ফলের দোকান ও মার্কেটপ্লেসেও খোঁজে পাবেন। তাছাড়া আপনি বিভিন্ন ফেইসবুক গ্রুপেও করোসল ফল খোঁজতে পারবেন।
করোসল ফল ক্যান্সার প্রতিরোধে কিভাবে কাজ করে
করোসল ফল যেভাবে ক্যান্সার প্রতিরোধ করে নিচে তা দেওয়া হলো -
- করোসলে থাকা অনন্য উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। এতে থাকা আনোনাসিয়াস এসেটোজেনিয়ান যৌগ ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
- করোসল ফল ক্যান্সার কোষকে আলাদা করে তার উপর আক্রমণ করে।
- কোষের বৃদ্ধি বন্ধ করে এবং বিভাজনে বাধা দেয়।
- ক্যান্সার কোষকে শক্তি সরবরাহ করতে ব্যাহত করে। এতে ক্যান্সার কোষ মারা যায়।
- করোসল ফল ক্যান্সার কোষের রক্তপ্রবাহ বাধা দেয়। এতে করে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টির অভাবে ক্যান্সার কোষ মারা যায়।
আরও পড়ুনঃ হাঙ্গেরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
আর্টিকেল সম্পর্কিত প্রশ্ন-উত্তর
প্রশ্ন ১: করোসল ফলের দাম কত?
উত্তর:করোসল ফলের দাম ৪৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো হয়ে থাকে।
প্রশ্ন ২:ঢাকার কোন জায়গায় করোসল ফল পাওয়া যায়?
উত্তর: ঢাকার চারাবাগ,আশুলিয়া নার্সারিতে করোসল ফল পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৩: করোসল ফল বাংলাদেশের কোথায় পাওয়া যায়?
উত্তর: করোসল ফল বাংলাদেশের বরগুনা,ময়মনসিংহ,রাজশাহী,নীলফামারিতে,সিলেটে, ঢাকায় পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৪: করোসল ফলের কি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে?
উত্তর:করোসল ফলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
প্রশ্ন ৫:গর্ভবতী মহিলারা কি করোসল ফল খেতে পারবে?
উত্তর: গর্ভবতী মহিলাদের করোসল ফল পাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আরও পড়ুনঃ ইউরোপের কোন দেশে সহজে ভিসা পাওয়া যায়
লেখকের মন্তব্য
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায় এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ওষুধি গুনসম্পন্ন করোসল ফল ক্যান্সারসহ আরো অনেক রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। আমি আপনাকে পরামর্শ দিবো একটি করোসল ফলের গাছ বাড়িতে লাগিয়ে রাখুন। এতে আপনার বেশ উপকারে আসবে। আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার মতামত, পরামর্শ কিংবা প্রশ্ন আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট My Teach Info। ধন্যবাদ।
My Teach Info এরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url